Dhaka, bangladesh আমার বাবা নজরুল ইসলাম (দ্য গ্রেট

আমার বাবা নজরুল ইসলাম (দ্য গ্রেট নজরুল চেয়ারম্যান) ৪ জানুয়ারি ২০১৪ তে ইন্তেকাল করেন। টাটা মেডিকেল সেন্টার, ভারতে। ইন্ডিয়ান ভিসা বিষয়ক জটিলতায় আমি শেষ সময় তার পাশে ছিলাম না। আমার মা Lutfun Nessa এবং আমার মেঝ বোনের স্বামী Rubel Ahmed তখন কলকাতায়। মৃত স্বামীর লাশ হাসপাতালে রেখে একে একে শেষ করলেন সব আনুষ্ঠানিকতা। পুলিশ, এয়ারপোর্ট ফর্মালিটিজ। পরের দিনটা আমার জন্য অনেক দীর্ঘ ছিল। রাতে আমার বোনেরা, আত্মীয়রা সবাই মিলে এয়ারপোর্ট গেলাম বাবাকে রিসিভ করতে। শবযাত্রার সাথী হলো একটা ফ্রিজিং গাড়ী। পৃথিবীর বিদীর্ণতম সঙ্গীতহয়ে এম্বুলেন্স এগিয়ে চলল। আমি একমাত্র ছেলে। পরিবারের সবার বড়। মুসলিম পারিবারিক আইনে সবচেয়ে বড় গার্জিয়ান পরিবারের। আমার দায়িত্ব হলো বাবাকে রিসিভ করা। এই ছবিটা বাবাকে রিসিভ করার সময়ে এয়ারপোর্টে। প্রথম বারের মতো বাবার নামের সামনে মৃত শব্দটা দেখা। এটা হয়তো আমা কাছে বাবার প্রথম মৃত্যু সত্য হয়ে আসা। আমি এয়ারপোর্টের রানওয়ে ধরে অনেক দূর এগিয়ে গেলাম। রানওয়েতে একটা কফিন অযত্নে পরে আছে। আমি ধীর পায়ে বাবার কফিনের কাছে গিয়ে দাড়ালাম এবং হাত আখলাম কফিনে। শীতের রাতে অনেক ঠাণ্ডা ছিল সেই কফিন। এয়ারপোর্টের একজনকে সাথে নিয়ে একটা ট্রলিতে করে বাবার কফিন নিয়ে রওনা হলাম। বাইরে আমার বোনেরা, মা, বন জামাই, আত্মীয় স্বজনেরা অপেক্ষমান। অবরোধ এবং হরতালের সময়। আনেকেই আসতে পারে নি। দীর্ঘ ২৭ বছর তিনি চেয়ারম্যান ছিলেন রায়গঞ্জ ইউনিয়নের। চেয়ারম্যান থাকা অবস্থাতেই তিনি মারা যান। আমি যখন কফিন নিয়ে গেটের বাইরে বের হলাম। এক সাথে সবাই চিৎকার করে কেঁদে উঠল। আহারে। আহা। এরপর কফিন ফ্রিজিং গাড়িতে উঠিয়ে আমরা রওনা হলাম কুড়িগ্রাম। এই লোকটা কোনদিন পরিবারের লোকদের দিকে তাকান নি। সব সময় ছিলেন জনগনের জন্য নিবেদিত। অবরোধের সেই সময় রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড। আমাদের এই শবযাত্রার সাথে যোগ হলো আরো কিছু অচেন গাড়ি। বাবার লাশের দোহাই দিয়ে সবার নিশ্চিন্তে পারি দিল পথ। মৃত্যুর পরেও জনসেবা করে গেলেন বাবা। আজকে থেকে ২ বছর আগে বাবার জানাজা হলো। জানাজার সময় জনসমূদ্রে পরিনত হলো তার নিজ হাতে গড়া ২২ বিঘা জমির উপর K*R ব্রিক্স। কিছু মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে গেল জানাজায়। আমাদের বিশলা বাড়ির কম্পাউন্ডে মহিলারা গিজ গিজ করছে। বাবাকে কবর দিয়ে বাড়ি ফিরে এক ধরনে ক্লান্তি অনুভব করলাম। দীর্ঘ ১ টি বছর ধরে একটা যন্ত্রনা নিয়ে থেকেছি। আমি জানতাম তিনি ১ থেকে দেড় বছর বাঁচবেন। মেডিকেল সায়েন্স এপ্রুভ্ড সময় এটাই। এই সত্যটা কাউকে বলতে পারিনি। আমার বাবা মারা গেলেন। সেই সাথে চলে গেল আমার সব কাজে সবসময় সাপোর্ট করা মানুষটা। আমার সকল কাজের এন্জেল ইনভেস্টর। আর আমি ২৩ টি ক্রোমোজোম নিয়ে রয়ে গেলাম। Ahsan Habib Ranzu-Sharif Uz Zaman Nadira Nourin Nishi Noor A Naznin Humayun Kabir Asif Al Mahmud Badhan Azmary Akhter

Related posts

আজকে আবার বৃষ্টি এলো, এই শহরে

হ্যাপি নিউ ইয়ার ২০২২

Parsha Jenifa

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Read More