এখন ভোর হচ্ছে

সারা রাত জেগে আছি। এখন ভোর হচ্ছে। অদ্ভুত এই শহরের দালানগুলো সিলুয়েট হয়ে আছে। অনেক মানুষ হয়তো এই সময়ে তার হাই ডাইনামিক রেঞ্জের চোখ দিয়ে দালান আর ভোরের নরম আলোকে পৃথক করার চেষ্টা করছে। আর আমি বিনিদ্র।
যে বিনিদ্র সে নাকি স্বপ্ন দেখতে পারে না। কিন্তু স্বপ্নের অত্যাচারে কিছু মানুষ নিশাচর। আধুনিক ঘরে বসে, ইন্টারনেটে সারা দুনিয়া চরে বেড়ায়। এই পৌনে ৩৯ বছরের জীবনে এতো বেশী পরিবর্তনের মধ্যে পড়েছি যে নিজেকে আর চিনতে পারি না। আমার পুরো নিজেকে হারিয়ে খোঁজার মতো একটা বিষয় হয়ে গেছে।

গত দুই দিন থেকে মনে হচ্ছে কোথায় কী জানি নেই। এক ধরণের হাহাকার নিয়ে এপাশ-ওপাশ করছি। নিঃশব্দের নিশ্বাস টের পাচ্ছি। বড্ড এলোমেলো অবস্থা। যমপূরীর মতো, একটা কাকের ডাকও পাই না। এই শহরের কাকগুলো ধানমন্ডি পরিত্যাগ করেছে।

ভোর হচ্ছে, সবাই জাগছে। প্রতিটি প্রাণ যার যার অস্তিত্বের সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অনেক পড়তে হবে এই ভেবে বাবা-মায়েরা সন্তানদের ভোরে উঠিয়ে দিচ্ছে। আবার কেউ হয়তো সবচেয়ে আরামে ঘুমের মধ্যে তেপান্তরের মাঠে ঘোড়ায় চড়ে রাজকন্যাকে উদ্ধার করতে ব্যাস্ত। আমার শরীরের ভিতরের জীবাণুরা নতুন উদ্যেমে বাাঁচার জন্য রক্তকণিকাকে আক্রমণ করার কোন ফন্দিতে ব্যস্ত।
ইদানিং ভাবনাগুলো খুব এলোমেলো। ঘন্টার পর ঘন্টা লিখতে ইচ্ছে করে। কে কী ভাবল বা ভাবল না, গুরুত্ব দিল কী দিল-না এই ভেবে যাচ্ছেতাই ভাবে লিখতে ইচ্ছে করছে। বয়স হয়ে যাচ্ছে। পৃথিবী নামের এই গ্রহের অনেকগুলো ঋতু পার করে কেমন যেন অচেনা হয়ে গেছি।

কোন একদিন আমি ঠিক সব ছেড়ে চলে যাব। সভ্যতা নামের থিওরি যা কিছু দিয়েছে, সব ফেলে খালি পায়ে হেটে চলে যাব। ক্যালেন্ডার নেই, এপয়েন্টমেন্ট নেই, ফোন নেই, এসএমএস নেই, ফেইসবুক নেই, ইন্টারনেট নেই এবং কম্পিউটার নেই কোন খানে। শেষ কবে চাদের আলোয় ঘুমিয়েছি!

বড় অস্থির লাগছে। ভোর হচ্ছে অথচ আগের মতো আর জাগছি না। এভাবেই সভ্য হওয়ার চেষ্টায় দিনে দিনে আমার মৃত্যু হচ্ছে।

**//** ধানমন্ডি, ঢাকা।

Related posts

প্যাঁচা এবং মঙ্গল শোভাযাত্রা

হ্যাপি নিউ ইয়ার ২০২২

সবকিছু ব্যাল্যান্স করা বেশ জরুরি

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Read More