গতকাল আমার ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট দিতে হয়েছে। অনেক কিছু ইন্সটল করা হয়ে গিয়েছিল। পুরো সিস্টেম উল্টাপাল্টা হয়ে গিয়েছিল। তাই এন্ড্রয়েড ফোনটা ফ্যাক্টরি রিসেট দিয়ে সব ঠিক করলাম। সহজ সমাধান। এই একইভাবে সবকিছু যদি ফ্যাক্টরি রিসেট করে ঠিক করা যেত, অনেক ভালো হত। যেমন এই দেশটা!
অবাক হলেও সত্যি বাংলাদেশ নামের এই দেশটিরও একটা ফ্যাক্টরি রিসেট সিস্টেম আছে। কিন্ত এই রিসেট প্রসেসটা কে করবে সেটায় কিঞ্চিত সমস্যা। ১৯৭২ সালে এই রিসেট সিস্টেম তৈরি করা হয়েছিল। এবং পুরো প্রকৃয়াটি সুন্দর ডকুমেন্টেড আকারে আছে এখনো। এই ডকুমেন্টটা তৈরি করেছিল এই দেশের জনগন। সেই জনগন যারা সংগ্রাম করে দেশটা স্বাধীন করেছিলেন। বাংলাদেশ নামের দেশটা কেমন হবে, মানুষের অধিকার কী হবে, দেশের মালিক কারা হবে সব খুব সুন্দর এবং স্পষ্ট করে লেখা আছে ডকুমেন্টে। এই ডকুমেন্টকে সবাই ১৯৭২ সালের সংবিধান বা বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান নামে জানে।
সুন্দর নক্সিকাঁথায় মোড়ানো ৭২ এর সংবিধানটির বাংলা ভার্সনটি দেখার মতো। জয়নুল আবেদিন ছিলেন এর তত্বাবধানে। হাশেম খান করেছিলেন এর অলঙ্করণ। পুরো সংবিধানটি হাতে লেখা। দেখার মতো একটা আর্ট ওয়ার্ক।
গতকাল বাতিঘর থেকে Dipankar Das একটা কপি পাঠিয়েছেন। আমি অসুস্থ শরীর নিয়ে পড়লাম পুরোটা। পড়লাম আর কাদলাম। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার রংপুর পুড়ছে। আহারে! এই হচ্ছে আমার বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ!
এই দেশের ফ্যাক্টরি রিসেট করা এখন অতি জরুরী। দয়াকরে ১৯৭২ সালের ভার্সনে ফেরত যান। এর পরের যতগুলো ভার্সন হয়েছে, তা হয়েছে কোন ব্যাক্তি বা গোষ্ঠির স্বার্থ রক্ষার জন্য। বাংলাদেশ অথবা বাংলাদেশের মালিক মানে জনগণের স্বার্থ পরের ভার্সনগুলোতে নেই।
শরীর এবং মন কিছুই আজ ভালো নেই।
#1972 #Constitution