ভেবে দেখলাম ভর্তা বানানোর ব্যপারে এই দেশের বা বাঙালিরা বেশ পটু। এখনো আমার প্রিয় ভর্তা শিং মাছের ডিমের। আমার মা শিং মাছের ডিম আগুনে পোড়ায়ে অনেক মরিচ, পেয়াজ আর ধনেপাতা দিয়ে ভর্তা করে দেন। আর হ্যাঁ, সাথে থাকে কুড়িগ্রামের খাঁটি সরিসার তেল। এই খাবারের বর্ণনা লিখা কঠিন। লিখতে গিয়ে দেখছি কীবোর্ড পিছলে যাচ্ছে (জিভের জল আঙুলে চলে যাচ্ছে)।
আমার মা অনেক কিছুর ভর্তা বানাতে পারতেন (এখনো পারেন আমা ধারনা)। যেমন মিষ্টি কুমড়ার ছালের ভর্তা, তিষির ভর্তা, তিলের ভর্তা, আর প্রায় সব ধরণের মাছের ভর্তা। ছোট বেলায় দেখেছি যে খাবার নিয়ে কোন ধরনের ঝামেলা করলেই মা চট জলদি কিছু একটা ভর্তা করে দিতেন আর আমরা গপ গপ করে খেয়ে ফেলতাম। আমার ভর্তার প্রতি দূর্বলতা বন্ধুমহলে বেশ পরিচিত।
আজে বিকেলে বসন্ত বুঝতে রাস্তায় হাটছিলাম অনেক খানি। হুট করে ভর্তা বিষয়ক এই আলোচনার সূত্রপাত সেখানেই। ভর্তা আসলে কী? ভর্তা হলো যেকোন কিছুকে চূর্ণবিচূর্ণ করে তার সাথে নিজের পছন্দের এবং পরিচিত মশলা মিশিয়ে সম্পূর্ণ অচেনা একটা কিছুকে বাঙালি বানিয়ে ফেলার একটা তরিকা। তাই রাস্তায় যখন দেখি স্ট্রবেরি ভর্তা বিক্রি হচ্ছে, মজা পেয়েছি। এই জাতিকে ঘাটানো ঠিক হবে না। যে জাতি প্রায় সবকিছুকেই ভর্তায় রূপন্তর করতে পারে, তার থেকে সাবধান থাকাই ভালো।
শুভ রাত্রী।
ধানমন্ডি, ঢাকা।