সারাদিনের টুকরো-টুকরো কথা গুলো জমিয়ে রাখি। মাঝে মাঝে অনলি মি করে ফেইসবুকে লিখি। এটা ডায়েরি। জানি ঠিক পরের বছর এই দিনে জানতে পারব এক বছর আগে কী লিখেছি। তখন নিজের লেখা পড়ে চেষ্টা করব কেন লিখেছিলাম সেদিন। এইসব ডায়েরি উচ্চমানের সাহিত্য নয়। কিন্তু লিখতে হবে, না লিখলে একসময় লেখার অভ্যাসটা থাকবে না। প্রতিভা নামের কোন বিষয়ে আমার বিশ্বাস নেই। আমার কাছে সবকিছুই অভ্যাস। আমি বিশ্বাস করি অভ্যাস করলে অনেক কিছুই করা সম্ভব।
গত কয়েকদিন থেকে সবাই একধরণের আশঙ্কায় ভুগছেন; অনলাইন সেলিব্রেটি কিংবা সোস্যাল মিডিয়া হিরোদের বইয়ের বিক্রি নিয়ে। আদতে পৃথিবীর ট্রেন্ড এটা। এই বিষয়টা অনেক বেশী রাজনৈতিক। অনেক দিনের ইঞ্জিনিয়ারিং-এ সামাজিক এই ট্রেন্ডগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এগুলো নিয়ে হা-হুতাস করার কোনো কারণ নেই। এই ইঞ্জিনিয়ারিং সমাজের জন্য কী করতে পারে এটা নৃ-বিজ্ঞানীরা ভালো বলতে পারবেন। আমার যুক্তি সীমিত। তবে যা বুঝতে পারি সাধু বাংলা থেকে চলিত বাংলায় বাঙালিরা লিখতে শুরু করেছিল। এখন সেই ভাষাতেই আমি লিখছি।
ভাষা অসম্ভব ডায়নামিক একটা বিষয়। ভাষা নিজেই অনেক ট্রেন্ডি। তাইতো পৃথিবী থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫০০০ টি ভাষা বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। যদিও কোথাও পড়ি-নি যে প্রতিদিন কতগুলো নতুন ভাষা যুক্ত হচ্ছে।
কোন ভাষা গ্রহণ করবেন, সেটা আপনার ব্যক্তিগত চিন্তা। পাশের বাড়ির ভাবী সারাদিন স্টার-প্লাস দেখেন এইটা নিয়ে না ভেবে বরং আপনি আপনার পছন্দের বিষয় দেখুন। তবে কিছু করার থাকলে সামাজিক ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে কাজ করুন। এখানে আপনার প্রতিভা কাজে লাগানোর জায়গা আছে। তবে আমি কিন্তু একটু রক্ষণশীল।
গতকাল সুন্দর একটা বুটিক-দোকানে বেড়াতে গেলাম। ধুপের গন্ধে গিয়ে বসলাম। প্রসস্থ বারান্দায় বসে খাঁটি বৃটিশ আর্ল-গ্রে চা খেলাম। পুরো সময়টাতে চেষ্টা করেছি শুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে। আসলে পরিবেশ মানুষের ভাষাকে অনেক বেশী প্রভাবিত করে। আমি লক্ষ্য করে দেখেছি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষাতে নিজেকে কেমন করে জানি বদলে ফেলি। এটা ইচ্ছে করে যে তাও নয়। এটা মনে হয় বাঙালি আতিতেথিয়তা মনের কারণে। যখন কারো সাথে কথা বলি, ইচ্ছে থাকে সে যেন একটু স্বাচ্ছন্দে থাকতে পারে। তাই তার ভাষায়, তা ভাবে নিজেকে মেলে ধরি। ২০০ বছরের কলোনিয়াল মন এর থেকে মুক্ত নয়। তাই বলে কী আমার স্বকীয়তা থাকবে না?
এই স্বকীয় ঢং আসলে ভীর করে ডায়েরিতে। এখানে আমার সাথে আমার কথা বলা। আমার আমিকে প্রতিদিন যাচাই করে নেয়া। লেখার অভ্যাসকে ঝালিয়ে নেয়া। সবশেষে বলি, অন্য কী করল তা দিয়ে নিজের জীবনকে চালাবেন না। নিজের জন্য নিজের কাছে কিছু প্রতিজ্ঞা করুন। সেটিকে জীবনের মানদন্ডে দন্ডায়মান করুন। নিজের জন্য বাঁচুন। নিজেকে ভালোবাসুন। নিজেকে ভালোবাসা শিখতে শুরু করলে আশেপাশের সবাইকে ভালোবাসতে পারবেন।
**//** ধানমন্ডি, ঢাকা।
আমার যুক্তি সীমিত
347
previous post