করোনা কালে আমরা সবাই বেশ খারাপ অবস্থায় আছি। সামাজিক কারণের থেকে বেশী অর্থনৈতিক কারণ। বিশেষ করে যারা ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে যুক্ত তাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিং শব্দটা বেশ সুন্দর। আমার কাছে এর সহজ বাংলা হলো অনেকটা দিনমজুরের মতো। দিন মজুরদের কোন বেতন নেই। কাজ করলে টাকা, না করলে নাই। ফ্রিল্যান্সিং মূলত তাই। এই পেশায় জরিত মানুষ অনেক।
যেমন বলতে পারি আমাদের ছোট আকারের শিল্প টিভি বা ওয়েব নাটক সিরিজের লোকজন। কিংবা সিনেমা পাড়ার সকল মানুষ। সবাই ফ্রিল্যান্সার। যতদূর জানি, এই দেশের একটি মাত্র টিভি স্টেশন বেতনভুক্ত কিছু অভিনেতা অভিনেত্রী নিয়োগ করেছেন। আর বাকীরা? বাকী সবাই মানে অভিনয় শিল্পী, পরিচালক, সিনেমাটোগ্রাফার, লাইট ক্রু, সাউন্ড ক্রু, ক্যামেরা ক্রু.. সবাই ফ্রিল্যান্সার।
প্রচলিত টার্মে এই বিশেষ গোত্রের মানুষেরা সেলিব্রেটি। যেহেতু এই মাধ্যমটি মানুষের মৌলিক চাহিদার সাথে সম্পৃক্ত নয়, তাই অনুমান করছি এই শিল্পের চাকা ঘুরতে সময় লাগবে আরো বেশী। করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত রোল-ক্যামেরা-একশন বন্ধ থাকবে। যদি বন্ধ থাকে, এই শিল্পের মানুষেরা বাঁচবে কেমনে? সরকারি প্রনোদনা বিষয়ক কোন কিছু এখানে তো নেই!
গার্মেন্টস শিল্পে যেমন- শ্রমিকরা গরীব থেকেই যাচ্ছে কিন্তু মালিকদের প্রতিবছর গাড়ির মডেল পরিবর্তন হচ্ছে ঠিক তেমনি, নাকট বা সিনেমা শিল্পের কলাকুশলীরাও ভালো নেই। কিন্তু টিভি স্টেশন মালীকরা বেশ জমকালো অবস্থাতেই আছেন।
বিশ্বাস করেন, এই শিল্পীরা কোনদিন হাত পাতবেন না। শিল্পকে ধারণ করা অত সহজ না ভাইয়া। আমি এনাদের দয়া করতে বলছি না। একটা ছোট কাজ করলেই হয়: আগামী অনেক গুলো কাজের জন্য এডভান্স দিয়ে রাখেন। এই দু:সময়ে যদি একটু খোঁজ খবর করেন, এনারা এটা অন্তর থেকেই মনে রাখবেন।
ছবি : আমার চিত্রনাট্যে প্রথম নাটকের দৃশ্য। নাটকের নাম মনে নাই, হুমায়ূন আহমেদের কোন একটা ছোট গল্প থেকে করা। অভিনেতা রওনাক হাসানের সাথে সিনেমাটোগ্রাফার মশিউর ভাই। রওনক ভাইকে সবাই চিনবেন। কিন্তু মশিউর ভাইকে কতজন চিনেন?
পরের ছবিতে অভিনেত্রী স্পর্শীয়াকে সাবধানে নিয়ে যাচ্ছেন প্রডাকশন ম্যানেজার কামরুল। কামরুল ভাইকে আপনি চিনবেন না। কিন্তু কামরুল ভাইয়ের পেশার লোকগুলো ছাড়া প্রডাকশন হবে না। করোনার কারণে সবার কাজ বন্ধ। এনারা কেউ বেতন পান না।