গাঁজা সমাচার
****************
আঁতকে ওঠার কিছু নেই। এই বস্তু এবং আমি একে অপরকে ঠিক পাইনি। মানে আমার গঞ্জিকাপ্রাপ্তি কখনো ঘটেনি। ওই বস্তু আমার ঠিক যায় না। কখনো আসলে ধুমপানটাই করি নি। কিন্তু ছোটবেলা থেকে শব্দটা জানতাম। আমাদের গ্রামের ইন্দ্রদেব মুচি দু’বেলা আয়োজন করেই গাঁজা সেবন করতেন। যদিও গ্রামবাসী তাকে ‘ইন্দ্রার দেও’ নামে ডাকত। একজন মুচি সম্প্রদায়ের মানুষকে ঠিক ইন্দ্রদেব মানতে তাদের বেশ অনিহা ছিল বলে আমার ধারণা।
ইন্দ্রদেবের খুব সুনাম নেই। সে গাঁজা খায়, সিদ্ধি খায় আবার নিজের বানানো অদ্ভুত সব তারের যন্ত্র বাজিয়ে বেশ আনন্দের সাথে গানও গায়। বেশ মজার মানুষ। ছোটবেলা থেকে তাকে দেখতাম আগ্রহ ভরে। আসলে গাঁজাটা তার কিনে খেতে হতো না।
কুড়িগ্রামের আমাদের বাড়িটা ঠিক আসাম রাজ্যের কাছে। বাড়ির আশেপাশে, আনাচে-কানাচে গাঁজার গাছ এমনিতেই হতো, এখনও হয়। আগাছা বিশেষ গাছ। কেউ পাত্তা দেয় না। বেশী জঙ্গলের মতো হয়ে গেলে কেটে দেয়া হয়। কিন্তু ইন্দ্রদেবের মতো কিছু সরস মানুষ তার কদর বুঝত। তাই যত্ন করে সে গাঁজা গাছের মাথা থেকে জটার মতো বস্তুগুলো সংগ্রহ করত।
ছোটবেলার সময়টা সাদাকালো টিভির সময়। চ্যানেল মানেই বিটিভি অথবা কলকতা দূরদর্শন। বিটিভির ৮ টার সংবাদর বিখ্যাত বিষয়। সেই সময় বিটিভিতে প্রদিদিন গাঁজার সংবাদ শোনাতো। প্রায় শুনতাম ইসরাইলে গাঁজা নিয়ে কী জানি হচ্ছে। ছোট মাথায় ঠিক বুঝতাম না, যে জিনিস নিয়ে একটা মুচির আগ্রহ, সেই জিনিস টিভিতে এতো ফলাও করে বলার কারণ কী!
**//** ধানমন্ডি, ঢাকা।