২০২২ সাল শুরু হয়ে গেছে মধ্যরাত থেকে। বাঙালি আমি। যতই জিরো আওয়ার বলি না কেন, দিন এখনো শুরু হয় সূর্যের সঙ্গে। আজকের দিনের সূর্য এটি। সেই ভোর ৫:৩০ এ উঠে বসে আছি নতুন বছরের সূর্যটার জন্য। ঘরের ভিতর টের পাই নাই, বাইরে বেশ হিমেল বাতাস। বাধ্য হলাম গায়ে একটা জ্যাকেট চাপাতে।
অনেক ছবি তুললাম। নীচে তাকিয়ে দেখি এক ভদ্রলোকও ছবি তুলছে পাশের বাড়ির ছাদে। ভালো লাগল। আমার প্রতিবেশী একজন ফটোগ্রাফার, এটা আনন্দের। এই ছবিটা তোলার সময় বাসার সামনের গাছে বাসা বাঁধা চিল দম্পতি বেজার হলেন। বারবার আমাকে আক্রমন করার চেষ্টা করতে থাকলেন। আমার ক্যামেরার ৭০-২০০মিমি লেন্সটা খুব পছন্দ হয় নাই তাদের। এই আক্রমনাত্মক ভঙ্গিতে বুঝতে পারলাম তাদের বাচ্চা হয়েছে। এইরকম লেন্সের মতো কোন যন্ত্র (সম্ভবত এয়ারগান) নিয়ে তাদের দুঃস্বপ্ন থাকতে পারে।
নতুর বছরের শুরুতে এইরকম লড়াকু জুটি দেখে মনটা অনেক শান্ত হয়ে গেল। মানুষ হয়ে দিনে দিনে প্রতিবাদ করার সামর্থ হারিয়ে ফেলছি, পাখিরা মনে করিয়ে দিল।
সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা। এই বছর পোস্ট করব অনেক কম। আমি সেই জিরো লেভেলে চলে গেছি। লিখছি ফাউন্টেন পেন দিয়ে। কী লিখছি সেটাও বলছি না। রবীন্দ্রনাথকে এইবার ভুল প্রমাণ করার পালা।
আমরা আরম্ভ করি, শেষ করি না; আড়ম্বর করি, কাজ করি না; যাহা অনুষ্ঠান করি তাহা বিশ্বাস করি না; যাহা বিশ্বাস করি তাহা পালন করি না; ভূরিপরিমাণ বাক্যরচনা করিতে পারি, তিলপরিমাণ আত্মত্যাগ করিতে পারি না; আমরা অহংকার দেখাইয়া পরিতৃপ্ত থাকি, যোগ্যতালাভের চেষ্টা করি না; আমরা সকল কাজেই পরের প্রত্যাশা করি, অথচ পরের ত্রুটি লইয়া আকাশ বিদীর্ণ করিতে থাকি; পরের অনুকরণে আমাদের গর্ব, পরের অনুগ্রহে আমাদের সম্মান, পরের চক্ষে ধূলিনিক্ষেপ করিয়া আমাদের পলিটিকস্, এবং নিজের বাক্চাতুর্যে নিজের প্রতি ভক্তিবিহ্বল হইয়া উঠাই আমাদের জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
যা যা আরম্ভ করেছিলাম, শেষ করব আর কাজগুলো মনযোগ দিয়ে করব।