এক পৃথিবী লিখবো আমি
এক পৃথিবী লিখবো বলে ঘর ছেড়ে সেই বেড়িয়ে গেলাম
ঘর ছেড়ে সেই ঘর বাঁধলাম গহিন বনে
সঙ্গী শুধু কাগজ কলম
একাই থাকব, একাই দুটো ফুটিয়ে খাব
ধুলোবালি দু এক মুঠো যখন যারা আসবে মনে
তাদের লিখব, লিখেই যাব।
এক পৃথিবীর একশ রকম স্বপ্ন দেখার সাধ্য থাকবে যে রূপকথার
সে রূপকথা আমার একার।
**********
প্রিয় কবিতার কয়েকটি লাইন। যেহেতু আগের মতো মানে ঠিক যখন বয়স ছিল ষোল, সেই সময়ের মতো আর লিখি না। না লেখার বেদনা আমাকে ভাবায় না। ইচ্ছে হলেই লিখতে পারি, এটাই ছিল বিশ্বাস। কিন্তু ইদানীং দেখছি আর লিখতে পারছি না। প্রযুক্তির চাপে লেখা মাথার ভিতর থেকে হাওয়া। আর কী নিয়ে লিখব বা লেখা উচিৎ এই্ ডিলেমা তো আছেই। তারপরও নিজের লেখক সত্ত্বার মৃত্যু এড়াতে লিখতে হয়। লিখতে হচ্ছে।
ক’দিন আগে পুরনো এক ফোল্ডারে কৈশর এবং কৈশরউত্তির্ণ বয়সের কিছু লেখা পেলাম। সেখান থেকে একটা কবিতা এখন পোস্ট করছি:
***************
পহেলা বোশেখ প্রাপ্তি
******************
আকাশের শূন্যতায় প্রশ্ন করেছিলাম
ভালোবাসি আমি কি তোমায়, প্রকৃতি?
কোন জবাব আসেনি,
অনন্ত নক্ষত্র বীথির সাথে আমার প্রশ্ন
সন্ধি করেছিল, ভালোবাসার উত্তাপে
নুতন দীপ্যতায় জ্বলেছিল, প্রশ্নের ভেতর;
আর তাই নিচে-
প্রশ্নের কিরণে খড়তায় উত্তপ্ত প্রকৃতি
বসন্ত উৎসবে নৃত্য উদ্বাহু
আমার প্রশ্ন সব খানে ভাসে
আমি কি ভালোবাসি……..ভালোবাসি?
এই সকাতর ধ্বনিতে প্রকৃতির বাসন্তী খড়তা ফুরোয়
প্রশ্নের পাতাটা হঠাৎ’ই উল্টে যায়;
-তুমি ভালোবাস, ভালোবাস কবি
নব সূচনা সময়ে সময়ে
চেতনার জাগৃত রূপে যাও ফিরে তবে
পহেলা বোশেখে।
** ১২.০৪.১৯৯৯ **
১৯৯৯ সালের ১২ এপ্রিল রাতে লেখা এই কবিতা। আমার বয়স ছিল ১৮+। এই কবিতা ছিল ফরমায়েসের। এলাকার বড় ভাই আবৃত্তি করতেন। উনি আসলে এই দেশের বিখ্যাত এক আবৃত্তিকার। রাজশাহী সননের। এলাকায় নতুন একটা আবৃত্তির প্রতিষ্ঠান করেছেন। ওনার সেই প্রতিষ্ঠান থেকে একজন জাতীয় স্কুল পর্যায়ে গোল্ড মেডালিস্ট হয়ে হৈচৈ অবস্থা। তো সেই বড় ভাইয়ের নাম রেজা। উনি পহেলা বৈশাখের জন্য আবৃত্তি অনুষ্ঠান করবেন। আমাকে বললেন নতুন কবিতা দরকার। আমি বললাম ‘লিখে দিচ্ছি’। এই কবিতা আসলে সেই কবিতাটাই। রেজা ভাই আবৃত্তি করেছিলেন নিজেই। কোন এক কারণে সেই অনুষ্ঠানে আমি যেতে পারি নাই।
সমস্যা এখন অন্য জায়গায়। অতীতের লেখাকেই এখন দুর্বোধ্য লাগে। তার মানে যতদিন যাচ্ছে আমার চিন্তাচেতনা নিম্নগামী হচ্ছে। বড় আফসোস!
**//** ধানমন্ডি, ঢাকা